অনলাইন জগতে পুরনো বন্ধুদের সাথে যেমন আড্ডা, কথাবার্তা হয়, তেমনি নতুন বন্ধুও জোটে অনেক। মজার আলাপ করার পাশাপাশি সিরিয়াস চ্যাটিংও হয় অনেক। মজা কিংবা সিরিয়াস হওয়ার মধ্যেই হঠাৎ করেই মতের অমিল হতেই পারে। কিংবা ব্যক্তিগত আক্রমণেও অনেক সময় হতে হয় পর্যদস্তু। কেন, কেমন করে এসব হয়? কী করে রেহাই পাওয়া যায় এসব থেকে? আসুন জেনে নেয়া যাক কিছু চমৎকার টিপস-
- মানুষ হিসেবে আপনার একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে। যেকারও সাথে এটা নিয়ে আলাপ করতে যাবেন না। হয়তো আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ট যে বন্ধুটি, সেও যে আপনার রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হবে তা নয়। সুতরাং বন্ধুদের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করার আগে ভেবে নিন, কিংবা আলাপ করার সময় মার্জিত হোন। প্রতিটা মানুষেরই আলাদা মতাদর্শ থাকতে পারে। কারও মতাদর্শ আপনার পছন্দ না-ই হতে পারে। সেটা নিয়ে ঝগড়া না করে নিজের মতাদর্শটা তোলে ধরুন তার কাছে। তার আগে তার মতাদর্শের কারণটাও মনযোগ দিয়ে অবশ্যই শুনুন।
- আপনার বন্ধুটি ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য করবেন না। বন্ধুর ভালোবাসার মানুষটি আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে বাজে মন্তব্য কেন করবেন? স্রষ্টা সবার রুচি, সৌন্দর্যবোধ সমান করে তৈরি করেননি। এই বোধটা নিজের মাঝে লালন করাই শ্রেয়। কিংবা “দোস্ত, তোর প্রেমিকাটাতো ফাটাফাটি সেক্সি!” এমন মন্তব্য থেকেও বিরত থাকুন।
- অনলাইনে আড্ডার সময় অব্যশই অবশ্যই ধর্ম নিয়ে কথা কাটাকাটি, কটাক্ষ, বাজে মন্তব্য, ঢিল ছোঁড়াছুড়ি করবেন না। এতে বন্ধুত্বের মধ্যে কেবল দূরত্বই সৃষ্টি হবে। কেন অযথা বন্ধুত্বের মাঝে ফাটল ধরাতে যাবেন মানুষের এই সূক্ষ্ম বিশ্বাসের ব্যাপারটি নিয়ে? সুতরাং কোমলতা প্রদর্শন করুন।
- শুধু নিজের মতামতটিই সবসময় প্রাধান্য দেবেন না। আপনার চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাসে যে ভুল নেই সেটা আপনি নিশ্চিত করে বলতে পারেন না। জানেন তো- পৃথিবী স্থির, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে এটাও একসময় প্রমাণিত ছিলো। সুতরাং নিজের মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন কিন্তু আপনার বন্ধুর মতামতটিও গুরুত্বের সাথে শুনুন।
- ফেসবুক ম্যাসেজ, চ্যাট, স্ট্যাটাস, কমেন্ট ইত্যাদিতে স্ল্যাং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা-ই শ্রেয়। কাউকে গালি দিয়ে নিজেকে কখনোই বড় প্রমাণিত করতে পারবেন না। বরং এতে আপনার পরিবারের ব্যাপারেও অন্যদের ধারণা বিরূপ হতে পারে।
- জানাশোনা কোনো বন্ধুর দুর্বল দিক নিয়ে অনলাইনে পাবলিকলি কোথাও বা ফেসবুকে স্ট্যাটাস, মন্তব্যে তুলে ধরবেন না। এতে বন্ধুটিও ক্ষিপ্ত হয়ে আপনার দুর্বল দিকটি তুলে ধরবে। এতে পাল্টাপাল্টি কাঁদা ছোড়াছুড়ি চলতেই থাকবে নিশ্চিত জানুন। মনে রাখবেনÑ প্রতিটা মানুষেরই কিছু না কিছু দুর্বল বা নাজুক দিক থাকেই।
- যা-ই করুন না কেন, একটা ব্যাপার মনে রাখবেনÑ অনলাইনে আপনি যা করবেন, লিখবেন, তুলে ধরবেন, সবই সার্চ ইঞ্জিন যেমন- গুগল, বিং, ইয়াহু ইত্যাদিতে রেকর্ড হয়ে থাকবে। যা আপনি ভুলে গেলেও সার্চ ইঞ্জিনগুলো ভুলবে না। দশ বছর পরও সেটা প্রদর্শন করবে সে। সুতরাং যা করবেন, লিখবেন সবই কেয়ারফুলি করাই শ্রেয় নয় কি?
আপনার অনলাইন জীবন সুন্দর হোক, সাবলীল হোক, হোক আনন্দময়। শুভকামনা আপনার জন্য।
———————————
প্রথম প্রকাশ : দৈনিক সমকাল, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.