ছবির মতো সুন্দর ও প্রাণবন্ত একটি গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়েই নদীর মতো করে চলে গেছে একটা পাথুরে পাহাড়। এই পাথুরে পাহাড় গ্রামটাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। পাহাড় থেকে প্রবাহিত হয় ঝর্ণা। এর সৌন্দর্য দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। গ্রামের মানুষ এই ঝর্ণার পানি দিয়েই তাদের ধোয়ামোছা সারে।
একদিনের কথা_ দু’জন মহিলা গিয়েছে ঝর্ণা থেকে পানি আনতে। তাদের একজনের হাতে মাটির পাত্র আর অন্যজনের পাত্র পিতলের। তারা নিজেদের পাত্র এক পাশে রেখে ঝর্ণার পানিতে পা ডুবিয়ে গল্প করছিলো। গল্প করতে করতে তারা যে পানির জন্য এসেছিলো, সে কথাই ভুলে গিয়েছিলো। শুধু কি তাই? তারা তাদের মাটি আর পিতলের পাত্র দুটিও রেখে বাড়ি চলে এসেছিলো।
বিকেলের দিকে ঝর্ণার প্রবাহ বেড়ে গেলো আর পাত্র দুটি পানি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। যখন পানিতে পাত্র দুটি ভেসে যাচ্ছিলো, মাটির পাত্রটি অনেক কষ্টে নিজেকে পিতলের পাত্রটি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। এই দেখে পিতলের পাত্রটি বললো, ‘তুমি কেন আমাকে ভয় পাচ্ছো বন্ধু? আমি তো তোমাকে আঘাত করবো না। সুতরাং তুমি ভাঙবেও না!’
মাটির পাত্র বললো, ‘তুমি আঘাত করবে_ আমি সেই ভয় পাচ্ছি না। কিন্তু আমি যদি তোমার কাছে যাই, তাহলে তোমার সঙ্গে ধাক্কা লাগবে। আর ধাক্কা লাগলে তোমার চেয়ে আমারই বেশি ক্ষতি হবে। তাই আমি নিজেকে তোমার কাছ থেকে দূরে রাখছি। নিজেকে নিজে নিরাপদে না রেখে অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানের কাজ না?’
এভাবে তারা দুই বন্ধু পানিতে বয়ে চললো। তোমরা পাহাড়ে বেড়াতে গেলে ঝর্ণার পানি বয়ে চলা ছড়া বা নালাগুলোতে যদি এই দুই পাত্রকে দেখো, তবে একটু আদর করে একজন থেকে আরেকজনকে একটু দূরে সরিয়ে দিও। তা না হলে যে মাটির পাত্রটা ফের বিপদে পড়ে যাবে!
অনুবাদ: পান্থ বিহোস | ছবি: অনলাইন